আমাদের শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে ভিটামিনের কোনো বিকল্প নেই আপনার দুর্বলতা থেকে শুরু করে মাথা ঘোরা বা হাড়ের স্বাস্থ্য রক্ষায় ভিটামিন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমেরিকান ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসেসের মতে আমাদের দেহে মোট তেরোটি ভিটামিনের চাহিদা রয়েছে। কিন্তু এই ভিটামিন গুলো পরিমিত পরিমাণে আমাদেরকে নিতে হবে। আমাদের শরীরের দুর্বলতা বা মাথা ঘোরা বা ক্লান্তি ভাব এই সবগুলোই নির্ভর করে।
আমরা কতটুকু ভিটামিন নিচ্ছি। তার উপর এখন ভিটামিন সম্পর্কে যদি আলোচনা করতে হয় তাহলে কিন্তু কয়েক ঘণ্টা চলে যাবে। এবং আমরা যখন পড়াশোনা করতাম তখন এক একটা ভিটামিনের উপরেই এক একটা সেমিস্টার থাকতো। অর্থাৎ জানার আছে অনেক কিছু তবে আমি আজকে
আপনাদেরকে প্রাথমিক পর্যায়ে বোঝার জন্য যে আপনাদের শরীরে কি কি ভিটামিনের অভাবে কি কি সমস্যা হচ্ছে তার একটা ধারণা দেবো প্রাথমিকভাবে তাহলে আমরা এই ব্যাপারগুলো দেখে বুঝতে পারবো যে কোন ভিটামিনের অভাবে আমাদের শরীরে এমন হচ্ছে। কিছু রোগের কথা বলছি, তার মধ্যে প্রথমেই হচ্ছে:
মাড়ি থেকে রক্ত পড়া
দাঁতের মাড়ি থেকে যখন রক্ত পড়বে তখন সাধারণ ভাবে আপনি ভেবেই নিবেন যে আপনার শরীরে ভিটামিন সি এর অভাব হচ্ছে।এই ভিটামিন সি শুধুমাত্র মাড়ি থেকে রক্ত পড়ার জন্যই দায়ী নয় এছাড়াও আমাদের শরীরে যে বিভিন্ন রকম ক্ষত বা প্রদাহের সৃষ্টি হয় এগুলো থেকে সেরে উঠতেও ভিটামিন সি ভীষণ রকমের ভালো একটা ভূমিকা পালন করে। এ ছাড়া যাদের অ্যানিমিয়া আছে বা না থাকে আমাদের শরীরে কিন্তু আয়রনের ঘাটতি যেন না হয় তার জন্য কিন্তু সাজেস্ট করা হয়। যে যখন আমরা আয়রন জাতীয় খাবার খাবো তার সাথে যেন কিছুটা ভিটামিন সি থাকে।
কি কি থেকে আমরা ভিটামিন সি পাবো?
তাহলে এই আয়নের অ্যাবজর্সনটা আমাদের শরীরে খুব ভালো হয়। এবং আয়রনটা আমাদের শরীরে ভালো কাজে লাগে তাহলেই প্রাকৃতিক ভাবে কোথা থেকে পাবো আমরা এই ভিটামিন সি, লেবু থেকে, কমলালেবু থেকে বিভিন্ন রকম টক জাতীয় ফল আমলকি, আমরা এ ছাড়া সবজির মধ্যে পেতে পারি বাঁধাকপি থেকে, পালং শাক থেকে, এগুলো যদি আপনার খাদ্য তালিকায় আপনি রেগুলার রাখেন, তাহলে ভিটামিন সি এর চাহিদা সহজেই পূরণ হয়ে যাবে।
নখ ভেঙে যাওয়া বা চুল পড়ে যাওয়া
কারো যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় চুল পড়ে যায় বা খুব সহজেই নখ ভেঙে যায়। তাহলে আপনি ধরে নেবেন আপনার শরীরে ভিটামিন বি সেভেনের অভাব রয়েছে। কি এই ভিটামিন বি সেভেন? আর একটা নাম আছে যেটা বললেই আপনি খুব সহজেই ধরে ফেলবেন কি এই ভিটামিন বি সেভেন, ভিটামিন বি সেভেনের আর একটি নাম হল বায়োটিন, কেন বললাম? আজকাল সাপ্লিমেন্ট হিসাবে ছেলে মেয়েরা বা বিভিন্ন বয়সের মানুষেরা biotin টাকে খুব সহজেই গ্রহণ করতে কিন্তু supplement ছাড়াও যদি আপনার বয়স অনুযায়ী আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে বাইরে থেকে ভিটামিন বি সেভেন গ্রহণ করেন তাহলে কিন্তু এর চাহিদা আপনার শরীরে পূরণ হয়ে যাবে।
কি করে পাবো ভিটামিন বি সেভেন?
কোথা থেকে পাবো আমরা এ ভিটামিন বি সেভেন, খুব কমন কিছু খাবার যেমন মাছ, ডিম, পালং শাক, বাঁধাকপি এই খাবারগুলো যদি আপনি রেগুলার আপনার ডায়েটে রাখেন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে রাখেন, তাহলে আপনার চাহিদা কিন্তু পূরণ হয়ে যাবে।
মুখে আলসার বা মুখে ঘা
যেটা ঘনঘন অনেকেরই হয়, এটা কেন হতে পারে? যখন আপনার শরীরে ভিটামিন বি ওয়ান, ভিটামিন ভিটামিন বি টু এবং ভিটামিন বি সিক্স এর অভাব হবে তখন কিন্তু ঘন ঘনই আপনার মুখে আলসার বা ঘা দেখা দেবে। এবং প্রাথমিক অবস্থাতেই যদি আপনি এর চিকিৎসা করেন তাহলে এটা রোধ করা সম্ভব। কিন্তু চিকিৎসার সাথে সাথে যার এর প্রকোপটা বেশি তাকে কিন্তু বাইরে থেকেও খাবারটা ভালোমতো গ্রহণ করতে হবে।
কিভাবে পাবো আমরা ভিটামিন বি ওয়ান, বি টু এবং বি সিক্স?
তাহলে কোথা থেকে পাবো আমরা ভিটামিন বি ওয়ান, বি টু এবং বি সিক্স? এগুলো দুগ্ধজাতীয় খাবারে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় এবং সবুজ শাকসবজি থেকে আপনি পাবেন।
চোখে ঝাপসা দেখা
অনেকে কমপ্লেন করে সন্ধ্যার পরে চোখে ঝাপসা দেখছে বা দিনের আলোয় যতটা সে ভালো দেখত সেটা সে সন্ধ্যার পরে দেখে না। অর্থাৎ আপনি প্রাথমিকভাবে ধরে নেবেন আপনার শরীরে ভিটামিন এ এর অভাব হচ্ছে। অর্থাৎ যেটা আমরা আগে বই এ ছোটবেলায় অনেক পড়েছি যে রাতকানা রোগের জন্য আমরা সন্ধ্যার পরে ভালোমতো দেখতে পাই না। এবং এই রোগটার জন্য সবচেয়ে বেশি দায়ী করা হয় ভিটামিন এ কে, ভিটামিন এ সাপ্লিমেন্ট হিসেবেও আপনি নিতে পারেন। কিন্তু আমাদের diet এ কিন্তু regular ভিটামিন এই জাতীয় খাবার রাখতেই হবে।
ভিটামিন এ জাতীয় খাবার কোথা তেকে পাবো?
তাহলে কোথা থেকে পাবো আমরা ভিটামিন এই জাতীয় খাবার। বিভিন্ন রকম ধুগধজাতীয় খাবার থেকেও ভিটামিন A পাওয়া যায়। এছাড়া আমাদের দেশের বিভিন্ন রকম কালারফুল শাকসবজি থেকে কিন্তু প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ আপনি পাবেন। যেমন টমেটো, গাজর বা অন্যান্য কালারফুল যে শাকসবজি গুলো আছে সেগুলো যদি পরিমিত অ্যামাউন্টে আপনি খান তাহলে আপনার ভিটামিন A এর চাহিদা পূরণ হয়ে যাবে।
আপনার জন্য শেষ কথা
শেষে আমি বলতে চাই যেটা আমি প্রথমেই বললাম যে ভিটামিন নিয়ে আলোচনা করলে দুই তিন ঘন্টা এমনিই পার হয়ে যাবে। কিন্তু আপনি কিভাবে এই ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার আপনার প্লেটে সাজাতে পারেন তার জন্য থাকছে একটা ছোট্ট টিপস। জাপানিসরা একটা method follow করে! যেটাকে বলা হয় জাপানি রংধনু পদ্ধতি। এখানে ওরা কি করে? এখানে যখন ওরা বাজার করে ওরা বাজারের ঝুড়িতে ওদের কি খেতে ইচ্ছা করছে বা কোন খাবারের কোন ভিটামিন টা আছে, এটা চিন্তা করে ওরা ঝুড়িটা সাজায় না।
ওরা খাবারের ঝুড়িতে বিভিন্ন কালারের ফল, শাকসবজি এবং মাংস বা মাছ এগুলো তোলে অর্থাৎ খাবারের ঝুড়িটাকে ওরা বিভিন্ন কালার দিয়ে সাজাই এবং একইভাবে ওরা যখন বাসায় ওদের খাবারের প্লেটটা সাজায় তখন সেম পদ্ধতি অবলম্বন করে। যে কতগুলো কালার দিয়ে ওরা ওদের প্লেটটাকে সাজাতে পারছে। যেমন ফলের মধ্যে অনেকগুলো কালার যেমন আছে, আবার সবজির মধ্যেও আপনি অনেক কালার পাবেন।
আবার মাছ, মাংসেরও রান্নার ফলে বিভিন্ন রকম কালার ধারণ করে। আবার দুধের একরকম কালার হয় আবার বাদাম বা বীজ জাতীয় খাবারের আর একরকম কালার হয়। অর্থাৎ প্রত্যেকটা খাবার থেকেই যখন আপনি ভিন্ন ভিন্ন কালারের বা খাবার বা ফল বা মাছ মাংস নিয়ে প্লেটটাকে সাজাবেন তখন অটোমেটিক্যালি কিন্তু আপনার ভিটামিনের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হয়ে যাবে। সবাই ভালো থাকবেন। ধন্যবাদ