মাথা ব্যথা একটা খুব কমন সমস্যা, আপনারা সবাই জানেন, অনেক রোগী আছে যে ডাক্তার সাহেব খুব মাথা ব্যথা করে, রাত্রে বেলায় মাথা ব্যথার জন্য, ঘুমাতে পারি না। অনেক সময় ঘুম থেকে উঠে মাথা ব্যথা করছে মাথা ব্যথার জন্য বমি বমি ভাব আসছে তখন কোন আওয়াজ সহ্য করতে পারি না। কোন কথা সহ্য করতে পারি না, কোন আলো সহ্য করতে পারি না।
মাথা ব্যাথা কেন হয়?
বিভিন্ন মাথাব্যথা নিয়ে যখন অনেক নিউরো মেডিসিন কিংবা মেডিসিনের ডাক্তারের কাছে যাচ্ছেন তখন কিন্তু তারা বলে যাবে চোখের পাওয়ারটা একবার চেক করে দেখেন তো চোখের পাওয়ারটা সমস্যা থাকলে অনেক সময় মাথা ব্যথা করতে পারে। এই কমপ্লেন নিয়ে আমাদের চোখের ডাক্তারের কাছে অনেক সময় অনেক রোগী আসে। বিশেষ করে ডাক্তার এর কাছে এই রোগীগুলো অনেক পেয়ে থাকি। যে এই রোগীগুলো এসে কমপ্লেন করে ডাকতেছে আমার চোখের পাওয়ারটা সমস্যা আছে কিনা, তো ডাক্তার চেক করে দেখে যখন বলেন যে চোখের পাওয়ার একদম ১০০% ভালো আছে। তাহলে কেন মাথা ব্যথা করছে।
মাথা ব্যাথার মূল কারণ কি?
আমরা একটু শুনি মাথা ব্যথার কিছু কারণগুলি যদি আমরা একটু নিজেদেরকে একটু সচেতন করি সেই কারণগুলো যদি আমরা একটু বুঝে শুনে চলি তাহলে কিন্তু আমাদের মাথা ব্যাথাটা ওষুধ ছাড়াই আমরা নিজেদেরকে ভালো রাখতে পারবো। বর্তমান দিনে এই মাথা ব্যথার রোগী আরো বেড়ে গেছে তার কারণ হচ্ছে হল লকডাউন, লকডাউন থেকে আমরা সারাদিন বাসায় বসে কম্পিউটার, মোবাইল ফোন, টিভি সারাদিন দেখছি, প্রত্যেকটা মুহূর্তে আমাদের চোখের ওর্ক করছে। Continuously আমরা ঘুমানোর আগ পর্যন্ত আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করছি।
এই মোবাইল ফোনের যে স্ক্রিন ওয়ার্কটা স্ক্রিন ওয়ার্ক এই রেডিয়েশন ইসেরটা আমাদের পুরো চোখের ভিতরে চোখের এক্টিভিটিকে এবং ব্রেনের সেলগুলাকে কোষগুলাকে অ্যাক্টিভ করে দিচ্ছে। রেস্ট হচ্ছে না, বিশ্রাম হচ্ছে না, দেখা যাচ্ছে তখন চোখ অনেকে কমপ্লেন করে যে ডাক্তার সাহেব মাথা ব্যাথার সাথে চোখ লাফায়। চোখ পাতি লাফায় vibration হচ্ছে। আমাদের যদি একটু খেয়াল করি, আমরা যদি মোবাইল ফোনের ব্যবহারটাকে একটু কমাতে পারি। তাহলে এই সমস্যার সমাধান অনেকটাই কুমে যাবে।
এখন যদি বলি যে ডাক্তার সাহেব আমার বাচ্চাকে তো অনলাইনে ক্লাস করতে হচ্ছে। অনলাইন ক্লাস কি সারাদিন হচ্ছে? নিশ্চই না, অনলাইন ক্লাস করার পরে তারপর কি করছেন? তারপর কি চোখের বিশ্রাম নিচ্ছেন? নিচ্ছেন না কিন্তু, তখন কিন্তু আবার মোবাইল ফোন নিয়ে দেখা যাচ্ছে ফেসবুক দেখছেন ইউটিউব দেখছেন, কোন সমস্যা নেই, কিন্তু আপনাকে বিশ্রাম দিতে হবে চোখে।
কি কি করলে মাথা ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে?
আপনার চোখের বিশ্রাম নিতে হবে। মোবাইল ফোন ব্যবহারটা পরিমিত করতে হবে। ঘুমানোর মিনিমাম তিন ঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করাটা একদম যাবে না। তাহলে আপনার ঘুম ঠিক মতো হবে। যদি আপনি মোবাইল ফোন দেখতে দেখতে ঘুমাতে যান, ঘুমটা আপনার ক্লিয়ার কখনোই হবে না। দেখবেন ঘুমানোর মাঝখানে, মাঝে মাঝে ঘুম ভেঙে যাচ্ছে, ঘুমটা কখনও সাউন্ড এবং ক্লিয়ার হবে না।
এবং তার পরিণাম হিসেবে সকালবেলায় আপনি দেখবেন মাথাটা ধরে আছে। মাথাটা ভারী হয়ে আছে এবং সকালবেলায় মাথা ব্যথা করছে। এটা খেয়াল করে দেখবেন। প্রত্যেকটা মানুষের আপনারা যখনই আপনার মোবাইল ফোন দেখে দেখে ঘুমাতে যাবেন তখনই দেখবেন রাত্রিবেলা ঘুমটা কখনোই ক্লিয়ার হবে না। কেন জানেন? এই মোবাইল ফোন যে স্ক্রিন ওয়ার্কটা করছেন না এটা চোখের ভেতরে আমাদের ব্রেনের প্রতিটা সেল্কের রেডিয়েশনটাকে একটিভ করে দিচ্ছে। তখন আপনি ঘুমাচ্ছেন ঠিকই কিন্তু ব্রেন কিন্তু অ্যাক্টিভ হয়ে যাচ্ছে।
ব্রেনও ঘুমাতে পারছে না, তা ব্রেনটা সচল আছে, শরীর নিস্তেজ কিন্তু ব্রেন অ্যাক্টিভ, কিন্তু সকালবেলায় উঠে আপনার ঘুম ঠিক মতো হচ্ছে না। ড্রাউজি লাগছে বমি বমি ভাব হচ্ছে, ঘুম ঘুম ভাবছে মাথাটা ভারী হয়ে আছে। সুতরাং তিন ঘণ্টা আগে থেকে মোবাইল ফোন ব্যবহারটা বাদ দিতে হবে। আপনি অবশ্যই উপকার পাবেন। এটা আমি কথা দিতে পারি আপনাদেরকে।
পানি খেলে কি মাথা ব্যথা কমে?
ডিআইজিশান একটি অন্যতম কারণ মাথা ব্যথা আপনার যদি ঠিক মতন পানির পরিমানমতো পানি খান তাহলে মাথা ব্যাথার সমস্যাটা অনেকাংশে কমে যাবে। দেখা যাচ্ছে আপনি রোজার সময় দেখেন ইফতারে কিছুক্ষন আগে অনেকের মাথা ব্যথা করে। কিংবা ইফতার করার পরে মাথা ব্যথা ভালো হয়ে যাচ্ছে। কারণ সারাদিন পানি না খেয়ে আছি dehydration এর কারণে, সুতরাং পানি তা ঠিক মতো খেতে হবে।
মেয়েদের মাথা ব্যথার কারণ কি?
ক্ষুধা লাগানো যাবে না, দেখা যাচ্ছে ক্ষুধা লাগলে অনেক সময় মাথা ব্যথা করে। মেয়েদের যেই সমস্যাটা দেখছি যে মাথা ব্যথার অন্যতম একটি কারণ গোসলের পরে সাথে সাথে চুল ভেজা রাখা অবস্থায় হিজাব পড়ছে মাথা ভেজা রাখা অবস্থায় হিজাব পড়তে গেলে তখন মাথা ঠান্ডা লাগছে মাথা ব্যথা করছে সেটা করা যাবে না।
অতিরিক্ত চিৎকার করে, চেঁচামেচি করে, কথা বলে, এসব করা যাবে না। হঠাৎ করে রেগে যাওয়া যাবে না, তারপর জার্নিতে যাওয়ার সময় খেয়াল করতে হবে। অনেক সময় যে বাসের জানলা দিয়ে বাতাস আসছে এটাও কিন্তু মাথা ব্যথা একটি অন্যতম করণ। এই কন্ডিশনগুলোতে মাইগ্রেনের সাথে সম্পর্কিত। মাইগ্রেন যাদের আছে তারা এই সমস্যাগুলা দিয়ে ভোগ করতে হয়, এই সমস্যাগুলো ফেস করতে হয়।
আমাদের শেষ কথা
আপনারা যদি এই নিয়মকানুনগুলো মেনে চলেন, এবং নিয়মিত যে ডিসিপ্লিন অনুযায়ী লাইফ স্টাইলটাকে মডিফিকেশান করেন, আর প্রতিদিন যদি তিরিশ মিনিট চর্চা করেন এবং তিরিশ মিনিট যদি আপনার এক্সেস করেন তাহলে মাথা ব্যাথার পরিমানটা অনেকাংশে কমে যাবে। ওষুধ ছাড়ে আপনি ভালো থাকবেন আশা করি। ধন্যবাদ